ধর্ষকের দ্রুত বিচার বাস্তবায়নের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ

Posted by

·

প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই ধর্ষণের খবর চোখে পড়ে… মানুষ হিসেবে প্রত্যেকটা মানুষের নিজের শরীরের ওপর যে অধিকারটুকু আছে, সেই অধিকার নিয়ে তামাশা করছে ভয়াবহ হারে বাড়তে থাকা এই ধর্ষণের খবরগুলো। ঘরের কোণে বসে থাকা সাধারণ মানুষ যারা কোনমতে নিজের গা বাঁচাতে পারলেই খুশি, তারাও নড়েচড়ে বসেছেন। কারণ অবস্থা দিনদিন সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। সারা দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। আমরাও শামিল হচ্ছি এই আন্দোলনে। আগামো এক সপ্তাহ ব্যাপী চলবে আমাদের কর্মসূচি। আমাদের নৈতিকতাবোধের গোড়ায় পঁচন ধরেছে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় লৈঙ্গিক সমতা কেবল মুখের বুলি, ক্ষমতার অপপ্রয়োগে জনজীবন বিপর্যস্ত। একদিকে আন্দোলনে উত্তাল দেশ, অপরদিকে ধর্ষণ কমছে না। পরিবর্তনের জন্য দরকার পুরো সিস্টেমের বদল। এ কাজ নিঃসন্দেহে কঠিন, কিন্তু শুরুটা হওয়া জরুরি। তাই ধর্ষণ বন্ধে আমাদের ভাবনা, দাবি, চিন্তা জানাবো আগামী এক সপ্তাহে। আপনিও যোগ দিন।

পরিবর্তন দরকার, এখনই!

আমরা সুনামগঞ্জবাসী সবাই এই ৭ দিন ব্যাপী ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে একত্রিত হবো। এই প্রতিবাদ শুধু আমার, আপনার না এটা সবার। সে, তারা, আমি, আপনি এখানে সব এক।

আমাদের এই আন্দোলনের দাবিগুলো হলোঃ
১. জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লৈঙ্গিক পরিচয় নির্বিশেষে যৌন সহিংসতার ক্ষেত্রে যেকোনোভাবেই ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ (দোষারোপ করা/নিন্দা জানানো) বন্ধ করতে হবে। গ্রামীণ সালিশ/পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

২. প্রাথমিক পর্যায় থেকেই পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা (ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শের শিক্ষা, সম্মতি বা কন্সেন্ট এর গুরুত্ব, শরীরের গোপন অংশ সম্পর্কে অবহিত করা) যোগ করতে হবে। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের ছবিতে বা পোস্টের কমেন্ট বক্সে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলে শাস্তির ব্যবস্থা করা।

৩. ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে বিচারকার্যের সকল পর্যায়ে বাদিনীর চরিত্র বা পেশাককে আমলে না নিয়ে তার উপর অনধিকার চর্চা প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তি নিরূপণ করা হোক এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।

৪. হাইকোর্টের নির্দেশানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর ও পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫.মাদ্রাসার শিশুসহ সকল শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হলে ৯০ দিনের মাঝে দ্রুততম ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা।

৬.যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে প্রান্তিক অঞ্চলের নারীদের সুবিধার্থে হটলাইনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৭. ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির বিনামূল্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ধরণের দায়ভার রাষ্ট্রের নিতে হবে।

৮. সুনামগঞ্জের নির্জন রাস্তায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ইভ-টিজিং এর যেকোনো অভিযোগে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে।

৯. সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে / স্বল্পমূল্যে সুনামগঞ্জের প্রত্যেক জেলায় মেয়েদের সেল্ফ ডিফেন্স শেখানোর ব্যাবস্থা করতে হবে।

Event link: https://www.facebook.com/events/1909940352481996/