যাত্রাপথ: নারীপক্ষ অফিস থেকে জাতীয় সংসদ ভবন
সময়: সন্ধা ৭টা, ২৫ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার)
কার্যক্রম: মশাল মিছিল
এই আন্দোলন একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ। কোন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক অন্তর্ভুক্তি ছাড়াই আমরা দুঃখ, ক্রোধ এবং ব্যাথা নিয়ে একত্রিত হয়েছি যেন আমরা শক্তি হয়ে এগিয়ে আসতে পারি।
কারা যোগদান করতে পারবে?
যে কোন কেউ।
আমরা কি নিয়ে আন্দোলন করছি?
গত বছর সারাদেশ ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। নৃশংস ধর্ষণের খবরে ক্রোধে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। তাদের দাবি ছিল নারীদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা।
নারী ও শিশু সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হয়ে উঠে তাদের কে রক্ষা করা। আমরা তাদের পিছনে টেনে ধরি, সাধারণ স্বাধীন জীবন থেকে বঞ্চিত করি, বলি বাড়িতে থাকলেই বাইরের হিংস্রতা তাদের স্পর্শ করবে না কিন্তু আমরা কাদের কাছ থেকে তাদের রক্ষা করছি? আমরা জানি যে আমাদের জীবনে সহিংস পুরুষরা কেবল রহস্যময় অপরিচিত লোক নয় | আমাদের কাছের পুরুষরা, আমাদের পরিচিত জন – আত্মীয়, বন্ধু, শিক্ষক, সহকর্মী – তারাও আমাদের উপর সহিংসতার জন্য দায়ী| আমরা জানি মেয়েরা ও নারীরা ঘরে এবং বাইরে সমান ভাবেই নিগৃহীত| আমরা জানি এই “রক্ষার” মনোভাব কখনই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি।
আমরা কিভাবে নারীদের “রক্ষা” করতে চেয়েছি?
নিরাপত্তার নামে আমরা ১৪ বছরের বালিকা কে মধ্যবয়স্ক পুরুষের সাথে বিয়ে দেই। বালিকা বধূর উপর শারীরিক ও মানসিক আঘাতের কথা আমাদের চিন্তায় আসে না | বাল্য বিবাহ নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতারই এক রূপ| বাংলাদেশে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক বালিকা বধু রয়েছে|
আমরা ঘরে থাকাকেই নিরাপদ মনে করি, অথচ প্রতি ৩ জন নারীর মধ্যে ২ জন নারী স্বামী দ্বারা সহিংসতার শিকার হন। আমাদের দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ আইনে এখনো স্বীকৃত নয়| পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে আমরা সহিংসতার শিকার নারী কে চুপ থাকতে বলি, অভিযোগ দায়ের করা থেকে বিরত করি| তাদের রক্ষা করার জন্য আমরা তাদের চলন বলন, কথা বলা, পোশাক পরিচ্ছদ নির্ধারণ করি এই সবকিছুর পরও যখন নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়, তখন ধর্ষকের বিরুদ্ধে আঙুল তোলার পরিবর্তে আমরা নির্যাতনের শিকার নারীকেই দোষারোপ করি | আমরা নারী ও শিশু সুরক্ষার নামে তাদের নতজানু, নিশ্চুপ এবং অদৃশ্য হওয়ার উপদেশ দেই।
এই ধরণের রক্ষা আমরা চাই না! আমরা ক্ষুব্ধ এবং আমরা চিৎকার করে বলতে চাই আমরা সুরক্ষার নামে বৈষেম্যের শিকার হতে চাই না, স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হতে চাইনা। যেই সুরক্ষার নামে আমরা বারবার নির্যাতনের শিকার হই সেই সুরক্ষার নামে ধর্ষণের দায় আমাদের উপর দেয়া চলবেনা। আমরা আমাদের অধিকারের সম্পূর্ন এবং নিঃশর্ত প্রয়োগ চাই ও আইন সংস্কার করে নারী-পুরুষের সম অধিকার প্রতিষ্ঠা চাই। আমরা যৌন নিপীড়ন থেকে মুক্তি চাই। আমরা যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ করতে এবং পূর্ণ মানুষ হিসাবে আমাদের জীবনযাপন করতে চাই।
যোগ দিন আমাদের সাথে “প্রতিরোধের আগুন” এই ২৫ শে নভেম্বর দলমত নির্বিশেষে আমরা আমাদের এই ক্রোধ প্রকাশ করব. আমরা রাজপথ দখল নিব, তা হোক দিন কিংবা রাত।
সকলের মেনে চলবার জন্য কিছু নিয়ম:
– আমরা ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করি না। এই ব্যাপারে সমর্থন করে এমন কোন পোস্টার/প্ল্যাকার্ড/ স্লোগান ইত্যাদি না আনার জন্যে অনুরোধ করা হচ্ছে।
– দয়া করে কোন প্রতিষ্ঠানের লোগো সম্বলিত পোস্টার বা ব্যানার আনবেন না।
– আন্দোলনের সময় ভাষা প্রয়োগে সচেতন থাকুন (অনলাইন এবং অফলাইন)




